নতুন মাত্রা পত্রিকার অনলাইন ভার্সন (পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

 ঢাকা      সোমবার ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের জুলাই আগষ্টের প্রেক্ষাপট ও সমসাময়িক ভাবনা

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ , ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 1 month আগে

মোর্শেদা মতিন মিলি: আমি ’৫২ দেখিনি, ’৬৬-৬৯ দেখিনি,’৭১ দেখিনি। দেখেছি ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান। বিগত প্রায় ১৬ বছর ধরে এদেশে দুঃশাসনের চিত্র. নানা ঘটনা দেখছি। স্বৈরশাসন মানে আমার এবং আমাদের মতো সাধারণ জনগণের বাকস্বাধীনতা চলাফেরার স্বাধীনতা, কোন কাজের স্বাধীনতা, এমনকি আমরা যে কারোর সাথে সম্পর্ক রাখার স্বাধীনতাও হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমাদের এক প্রকার জিম্মি করে রাখা হয়েছিলো নানাভাবে।

ও হ্যাঁ যা বলছিলাম স্বৈরশাসন। আমার মত সাধারণ জনতা তো বুঝতেই পারতাম না যে আমরা স্বৈরশাসকের কবলে পড়ে ধুকে ধুকে একটু একটু করে প্রায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছিলাম। যদি না আমরা চব্বিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এবং তাদের সাথে যোগ দেয়া দেশের সর্বশ্রেণীর সাধারণ জনগণ এবং সকল শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতিবাদ আন্দোলন না করতো তা হলে স্বৈশাসকের সঠিক চিত্র ফুটে উঠতো না। নানা বয়সী বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সকলে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এইবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে। তারপর যে ভয়াবহতা অমানবিক জুলাই আগষ্টের গণ হত্যা হৃদয়কে কাঁদিয়েছে। অবশেষে অনেক প্রাণ রক্ত ঝরার পর ৫ই আগস্ট এই স্বৈরাচার সরকারের পতন হলো। জুলাই থেকে আগষ্ট অগ্নিঝড়া দিনগুলোতে মনের সমর্থন ছিল আন্দোলনকারীদের সাথে। এতে নিজেকে গর্বিতও মনে করি। রাজপথে সরাসরি না যোগ দিলেও মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করেছি আমার সব সন্তানদের জন্য যারা ছিল রাজপথে।

১৪ জুলাই ২০২৪ আমার মেয়ে সাদিয়া শাম্মি মৌ এইচএসসি পরীক্ষা হল থেকে আসলো দেখলাম সেও উদ্বিগ্ন । মা মেয়ে এর পর থেকে শুধু দৃষ্টি রেখেছি সামাজিক মাধ্যমে এবং টিভি চ্যানেলগুলোতে। এরিমধ্যে দেখি রংপুরে আন্দোলনকারী আবু সাঈদকে প্রকাশ্য দিনের বেলায় পুলিশ গুলি করে হত্যা করলো । এত প্রকাশ্য হত্যা আর দেখিনি। এরপর আন্দোলনে পানি লাগবে পানি বলে আহবান জানানো মুগ্ধকে হত্যা করা হলো। মুগ্ধ আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চেনা মানুষ মীর মোস্তাফিজুর রহমান ভাইয়ের ছেলে। পরে একের পর আন্দোলনকারীদের শহীদ হওয়ার খবর । নৃশংসতা। আমিও আবু সাঈদ এবং মুগ্ধর মতো সন্তানদের মা। এই বয়সী সন্তান আমার রয়েছে। মনের মাঝে অনুভব এমন ভাবে যদি আমার সন্তানকেও হত্যা করা হয়? সে শোক আমার মনে ক্ষোভ হলো।

সন্তানহারার বেদনা এক মা-ই বুঝতে পারে । সেই বেদনায় শোকে ছাত্রদের আন্দোলনে পুরো একাত্মতা ছিল। অবশেষে ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারের পতন। দেখলাম মুক্ত বাংলাদেশ। বিজয় মিছিল। সন্তানহারার ব্যাথা বুকে রেখে একটি স্বস্তি এলো মনে। নতুনভাবে দেশ গড়ার প্রত্যয় দেখলাম। অনেক প্রাণ বিসর্জনে এক নতুন সময় উপলব্ধি করে মনে প্রত্যাশাও অনেক। অর্ন্তবর্তী সরকার গঠন হলো। এখনে আন্দোলনের সমন্বয়কদের যুক্ত করা হয়েছে। নবীণ প্রবীণের সম্মিলনে স্বপ্নের বালাদেশ হবে। এখন বুক ভরা আশা , স্বপ্নের বাংলাদেশে স্বাধীন ভাবে মানুষ সুখে থাকবে। সাধারণ মানুষ পাবে ন্যায্য অধিকার, উন্নত বাংলাদেশে আগামী প্রজন্ম সুখে থাকবে । যে অধিকারের জন্য ছাত্র জনতার প্রাণ গেছে রক্ত গেছে সেই ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ হবে সুন্দর বাংলাদেশ এটাই চাওয়া।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

November 2024
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  
আরও পড়ুন
অনুবাদ করুন »