ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষে নিহত দুই
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ , ৩০ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগে
সংবাদদাতা ॥ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সদর উপজেলার বিলকেন্দুয়াই গ্রামে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মুক্তিযোদ্ধাসহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ (৭৫) ও মলাই মিয়া (৪৫)। মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ এর মৃত্যু হয়। এর আগে সোমবার রাতে আহতাবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে মলাই মিয়া নরসিংদীতে মারা যায়। নিহত দু’জনই বিলকেন্দুয়াই গ্রামের বাসিন্দা। সংঘর্ষের সময় মহিলাসহ কমপক্ষে ৩০জন আহত হয়। সংঘর্ষ পরবর্তীতে উভয়পক্ষের দাঙ্গাবাজরা বাড়িঘর ভাংচুর ও ব্যাপক লুটতরাজ চালায়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বিলকেন্দুয়াই গ্রামের মাষ্টার বাড়ির আনোয়ার ও খন্দকার বাড়ির নসর মিয়ার মধ্যে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র তাদের মধ্যে বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জের ধরে সোমবার বিকেলে খন্দকার বাড়ির মলাই মিয়ার বাড়িতে মাস্টার বাড়ির লোকজন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় দাঙ্গাবাজরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতংকের সৃষ্টি করে। পরে উভয়পক্ষের লোকজন রামদা, বল্লমসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে মলাই মিয়া (৪০) কে বল্লম দিয়ে মাথায় আঘাত করলে গুরুতর আহত হয়। এসময় মহিলাসহ উভয়পক্ষের ৩০জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে রুবেল (২৬), মানিক মিয়া (৩৫), মাসুদ মিয়া (৩৫), রাসেল (১৮), রাজিয়া(৩০), ইয়ামিন (২২), আয়াতুল্লাহ (২৭), মমিনুল হক (৪০), ওয়াসিম (২৫), ইয়ামিন মিয়া (১৭), জীবন (১৮), বারেক (৪০), সাইদ মিয়া (৬৫), সুমন মিয়া (২১), রাকিব মিয়া (১৮), নাজমা (২৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি ও অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। গুরুতর আহত মলাই মিয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমুল হক আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকায় প্রেরন করে। ঢাকা যাবার পথে মলাই মিয়া মৃত্যুবরন করেন। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ মারা যান। এদিকে মঙ্গলবার সকালে উভয়পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের কমপক্ষে ৭০টি বাড়িঘর ভাংচুর, ২০-২৫টি গরু লুটের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকের একটি মটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন, এসপি হেড কোয়ার্টার আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল রেজাউল কবির, র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এদিকে উভয়পক্ষের লোকজন আতংকে বাড়িঘর ছেয়ে মালামাল নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্ধনদাতাসহ সকলেই আইনের আওতায় আসবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন