নতুন মাত্রা পত্রিকার অনলাইন ভার্সন (পরীক্ষামূলক সম্প্রচার)

 ঢাকা      শনিবার ১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে স্বামীর ঘরে লাকী আক্তার।

বার্তা সম্পাদক

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ , ২৫ মে ২০২১, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 4 years আগে

প্রতিবেদক:জন্ম- মৃত্যু ও রিজিক আল্লাহর দান। মানুষ একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথিবীতে আগমন করেন। এই অল্প সময় নানান দুখ-সুখ নিয়ে মানুষকে চলতে হয়৷ স্বাস্থ্যই সুখের একপমাত্র কারন। সুস্বাস্থ্য ছাড়া সংসারে সুখের প্রদীপ ঝলে না। তেমনি আখাউড়ার লাকী আক্তার (১৯) নামের এক নববধূর জীবনে ঘটেছে মর্মান্তিক ঘটনা। তার খুব স্বপ্ন ছিল সুখে-শান্তিতে স্বামীর সংসার করবে কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস লাকী রেক্টো ভ্যাজাইনাল ফিসচুলা ( RVF) রোগে আক্রান্ত হয়ে অবশেষে স্বামীর ঘর ছাড়তে হলো! বিরল রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে কিভাবে স্বামীর কাছে ফেরা যায়, সে পরামর্শ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রনজিত বিশ্বাসের কাছে শরণাপন্ন হন লাকী। অবশেষে সুস্থ হয়ে দীর্ঘ ৮মাস পর স্বামীর ঘরে ফিরছেন লাকী। পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৭মাস আগে লাকীর নরমাল ডেলিভারিতে একটি শিশু জন্ম হয়। অদক্ষ দাত্রী ডেলিভারির কারনে ও নানান জটিলতার কারণে নবজাতকটি মারা যায়। তখন লাকীর মাসিকের রাস্তা ও পায়খানার রাস্তা ছিড়ে একত্র হয়ে যায়। তার মা অসুস্থ লাকীকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু ওই অস্ত্রোপচার সাকসেস না হওয়ায় তার মাসিকের রাস্তার সাথে পায়খানার রাস্তা একত্র হয়ে ফিসচুলা হয়ে যায়। এ জটিল সমস্যার কারনে লাকীর স্বামীর তার সঙ্গে থাকতে অস্বীকৃতি জানায় এবং লাকীকে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দেন। তারপর লাকী ৭মাস যাবত স্বামীর কাছে যায়তে পারেনি। ওই সমস্যার কারনে তাকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ি মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল৷ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা করেও কোন সমাধান পাইনি লাকী। অবশেষে নববধূর শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বেচে নিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল। দীর্ঘ ৭মাস পর লাকীকে নিয়ে তার মা ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের ডা. আবু সাঈদের কাছে যান। পরে গত একমাস আগে মেডিক্যালের চিকিৎসক ডা. নাসিমা আক্তারের চেম্বারে গিয়ে গাইনী চিকিৎসক ডা. রনজিত বিশ্বাসের কাছে শরণাপন্ন হন। জটিল অস্ত্রোপচার করে সুস্থ করে স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দিতে ডা. রনজিত বিশ্বাসকে অনুরোধ করেন। পরে মানবিক দিক চিন্তা করে চলতি মাসের ৮ তারিখ ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজে লাকী ভর্তি হয়। পরেরদিন রবিবার ডা. রনজিত বিশ্বাসের সফল অস্ত্রোপচার করেন। অবশেষে লাকী সুস্থ হয়ে স্বামীর সংসারে ফিরেন। লাকী আবেগাপ্লুত হয়ে জানান, এখন তার স্বাভাবিক ভাবেই পায়খানা হচ্ছে। এখন তার কোন সমস্যা হচ্ছেনা। তিনি চিকিৎসক রনজিত বিশ্বাস ও নার্সদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের গাইনী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. রনজিত বিশ্বাস জানান, লাকীর রেক্টো ভ্যাজাইনাল ফিসচুলা ( RVF) রোগ ছিল। এই জটিল রোগের অস্ত্রোপচার খুব কম হাসপাতালে হয়। বাংলাদেশে প্রফেসর সায়েবা ম্যাডাম ও প্রফেসর আনোয়ারা ম্যাডাম ফিসচুলা চিকিৎসার অগ্র পথিক। আমরা খুব সুন্দর ভাবে অস্ত্রোপচারটি করতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, লাকী এখন সম্পূর্ণ- স্বাভাবিক ভাবেই জীবনযাপন করতে পারবে। স্বামীর সাথে থাকতে আর কোন অসুবিধে হবে না লাকীর। অস্ত্রোপচারটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আর্কাইভ

July 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
আরও পড়ুন
অনুবাদ করুন »