বিনয় এক মহাদৌলত,তা অর্জন করা অত্যাবশ্যক –মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৫:২৮ অপরাহ্ণ , ২৩ আগস্ট ২০২০, রবিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 3 years আগে
বিনয় এক মহাদৌলত,তা অর্জন করা অত্যাবশ্যক
———মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
তাওয়াজু আরবি শব্দ,এর অর্থ হলো বিনয়। অর্থাৎ নিজেকে ছোট মনে করা।বিনয় এক মহাদৌলত।বিশেষকরে তালিবুলইলমদের জন্য এই মহাদৌলত লাভকরা অত্যাবশ্যক। বিনয় অর্জন করা ছাড়া এলেম আসেনা।নিজেকে মিটিয়ে দেওয়া ছাড়া এলেম আসেনা।যে যতটা বিনয়ী হয় সে ততটাই সম্মানিত হয়।
রাসুলুল্লাহ( সাঃ)এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহতায়ালা তাকে উচ্চ মর্যাদা দান করেন।(সুনানে তিরমিজি)।
বিনয়ী নাহলে অহংকারী হয়ে যায় মানুষ। তখন সে নমরুদ,ফেরাউন, কারুনের স্বভাবে হয়ে যায়।আর বিনয়ী হলে মানুষ সীমাহীন মর্যাদার অধিকারী হয়ে যায়। আমাদের আকাবির আসলাফদের জীবনীর দিকে চোখ ফেরালেই আমরা দেখতে পারি যে, তারা নিজেদের কতটা বিনয়ী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন।
★ হজরত হাকিমুল উম্মত থানভী (রহঃ)র’ বিনয়।
হজরত হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভী রহমাতুল্লাহি আলাইহ বলেন, আমার অবস্থা হল,আমি প্রত্যেক মুসলমানকে বর্তমানে আমার চেয়ে ভালো জানি, আর প্রত্যেক কাফেরকে ভবিষ্যৎকাল হিসেবে উত্তম জানি। মুসলমান সে-তো মুসলমান। তার অন্তরে ঈমাণ আছে,তাই সে আমার চেয়ে উত্তম। কাফের হতে পারে সে ভবিষ্যতে ঈমানদার, আল্লাহর তাওফিক হলে ঈমাণ তার নসিব হবে। তাই সে সম্ভাবনার উপর ভর করে বলতে পারি,সে আমার চেয়ে উত্তম, আমি তার চেয়ে অধম।
★ হজরত হুসাইন আহমদ মদনী(রহঃ)র’ বিনয়।
ভারতের কমিউনিস্টদের প্রসিদ্ধ নেতা ডাঃ মুহাম্মদ আশরাফ বলেন, দেওবন্দে থাকাকালীন একরাতে আমি আমার বিছানায় শুয়া ছিলাম। সারাদিন ঘোরাঘুরির কারণে ক্লান্ত ছিলাম, রাতে ঘুমিয়েও গিয়েছিলাম, ঘুমের মাঝে আমি বুঝতে পারলাম কেউ আমার পায়ের টাখনুর উপর আমার পা টিপতে শুরু করলো। আমি বুঝতে পারলাম হজরত হুসাইন আহমদ মদনীর মতো ব্যক্তি আমার পা টিপে দেওয়ার কাজে ব্যাস্ত। আমি দ্রুত পা সরিয়ে আদবের সাথে হজরতকে নিষেধ করলাম। তখন মদনী (রহঃ)বললেন আমাকে আপনি এই নেকির কাজ থেকে কেন বঞ্চিত করছেন।আমি কি এর উপযুক্ত নয় যে, আমার মেহমানের সেবা করবো?
★ যুননুন মিশরী(রহঃ)র’ বিনয়।
মিশরে একবার দূর্ভিক্ষ দেখা দিলে লোকেরা যুননুন মিশরীর নিকট দোয়ার আবেদন করলেন যেন,আল্লাহতায়ালা বৃষ্টি বর্ষন করেন। তিনি মিশর থেকে বাহির হয়ে এক জঙ্গলে গিয়ে আল্লাহতায়ালার নিকট খুব কান্নাকাটি করে দোয়া করলেন। দোয়ার মধ্যে তিনি বললেন, হে আল্লাহ! মিশরের মধ্যে অনুপযুক্ত, সবচেয়ে গুনাহগার যুননুন,মিশর খালি করে দিয়েছে। এখন আপনি আপনার রহমতের বৃষ্টি নাযিল করুণ। তার এই বিনয়ের উপর রহমতের সমুদ্রে জোশ এসে গেল এবং খুব বৃষ্টি হল।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সকলকে আল্লাহর জন্য বিনয়ী হওয়ার তাওফিক দান করুণ, আমিন।
আপনার মন্তব্য লিখুন