ডেঙ্গু আতংককে পূজি করে সরকারী ডাক্তারের অনৈতিক কান্ড
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ৪:১৬ অপরাহ্ণ , ১০ আগস্ট ২০১৯, শনিবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগে
প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেঙ্গু আতংককে পূজি খাটিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের এক ডাক্তারের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। জ¦রে আক্রান্ত মিলন মিয়া নামক ১৬ বছরের রোগী গত ৯ দিন যাবৎ নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হয়েছে।
জানা যায়, বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরার বাহার মিয়ার ছেলে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা ১৬ বছরের মিলন মিয়ার জ¦র হলে তার খালা আনুরা বেগম তাকে ৩০ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে আসলে আনুরা দালালের খপ্পরে পড়ে। দালালরা ভাল চিকিৎসার এবং ভাল ডাক্তরের নাম করে মিলনকে পাশর্^বর্তী একটি মেডিকেল সেন্টারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসাপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ ফাইজুর রহমান ফয়েজ এর বেসরকারী চেম্বারে নিয়ে যায়। সেখানে ঐ ডাঃ মিলনকে দেখে ডেঙ্গুর হতে পারে বলে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা দেয়। এবং সদর হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন নয় , ভাল চিকিৎসা হবে না বলে ঐ ডাক্তারের অংশীদারিত্বের বেসরকারী হাসপাতাল শহরের মৌলভীপাড়ার হিউম্যান জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি হতে বলে। সেই হাসপাতালে মিলন ভর্তি হয়। ভর্তি কালীন বেডভাড়া পরীক্ষার খরচ বেশী আসতে থাকায় আনুরা বেগম রোগীকে সদরে ভর্তি জন্য বারবার অনুরোধ করে। আনুরা জানায় প্রায় ২০ হাজার টাকা বেসরকারী হাসপাতাল পরীক্ষা নিরীক্ষা থাকা বাবদ হাতিয়ে নিয়েছে। পরে ডাঃ ফয়েজ রোগীর অবস্থা খারাপ বাঁচাতে হলে ঢাকা নিতে হবে বলে ৪ আগষ্ট হিউম্যান জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার থেকে রেফার করে দেয়। তখন রোগীর খালা আনুরা বেগম মিলনকে নিয়ে সদর হাসপাতালে ৪ আগষ্ট পুনরায় নিয়ে আসে তখন হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডাঃ এম এ ফায়েজ মিলনের ব্যবস্থা পত্র দেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। এদিকে ঐদিন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মোঃ ফাউজুর রহমান ফয়েজ মিলনকে সদও হাসপাতালে দেখতে পেয়ে বলেন, এই রোগীর অবস্থা খারাপ ঢাকা নিতে হবে এখানে ভর্তি করা যাবে না বলে রোগীর আত্মীয়কে শাসিয়ে বিদেয় করে দেয়। পরে মিলন পাইকপাড়ার বাড়িতে চলে যায়। হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা নেই অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন বেসরকারী হাসপাতালে ভাল চিকিৎসার ব্যাপারে ডাঃ ফাইজুরের মন্তব্য সহ ঘটনাটির অভিযোগ সোস্যাল মিডিয়ায় জানাজানি হয়ে যায়। বিষয়টি অবগত হন সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ শওকত হোসেন পরে গতকাল ৯ আগষ্ট শুক্রবার তত্বাবধায়ক রোগী মিলনের বাড়ির খোঁজ খবর নিয়ে উনার তত্বাবধানে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং পেয়িং ওয়ার্ডে দুপুরে ভর্তি করান।
ডাঃ মোঃ শওকত হোসেন জানান,সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নার সহ নানা ব্যবস্থাপনা রয়েছে , দরিদ্র রোগীদের জন্য কোন প্রকার ফি ছাড়াই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সদর হাসপাতাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নয় এ কথা ঠিক নয়। তিনি জরুরী বিভাগের ডাঃ ফাইজুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে বলেন, এমন হলে তা দুঃখজনক। তবে মিলনকে এখন যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডাঃ ফাইজুর মিলন তার তত্ববধানে হিউম্যান জেনারেল হাসাপাতালে ভর্তি ছিল বলে স্বীকার করেন এবং বলেন আমার সমন্ধে মিলনের আত্মীয় যে অভিযোগ করেছে তা সত্য নয়।
এদিকে দুপুরে মিলনের খালা বলেন,মিলন এতিম ছেলে, তার বাবা নেই আমার কাছে সে থাকে। আমি বাসাবাড়িতে কাজ করি। কম খরচে বারবার সদর হাসপাতালে মিলনকে চিকিৎসা করতে চেয়েছি। কিন্তু ডাঃ ফাইজুর ফয়েজ আমাকে তার বেসরকারী হাসাপাতালে নিয়ে ভর্তি করিয়েছে। এবং সদরে ভাল চিকিৎসা হবে না আমার মিলন মাথা পেট মোটা হয়ে মারা যাবে বলে বয় দেখায়। পরে ঢাকা রেফার করে । এই হয়রানীর শিকার হয়ে আমার প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে , সুদী কর্জ করে এনে আমি সেই টাকা পরিশোধ করেছি। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।
আপনার মন্তব্য লিখুন