সরাইলে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ , ৫ আগস্ট ২০১৯, সোমবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগে
প্রতিনিধি: সরাইলে সোহাগ (২৫) নামের এক বখাটের নিয়মিত উত্ত্যক্তে অতিষ্ট হয়ে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর পাঠদান বন্ধ করে দেয় অভিভাবকরা। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি ওই ছাত্রীর। গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর পুকুর ঘাট থেকে জোর পূর্বক ওই ছাত্রীকে টেনে নিয়ে যায় বখাটে সোহাগ। একটি ঘরে ঢুকিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। ছাত্রীর ধস্তাধস্তি ও আর্তচিৎকারে আশপাশের মহিলা ও পুরুষরা দৌঁড়ে এসে সোহাগের কবল থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করে। বখাটেকে আটকানোর চেষ্টাকালে পড়নের গেঞ্জী ছিঁড়ে ফেলে চলে যায় বখাটে। রাতেই থানায় হাজির হয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন ছাত্রীর বাবা। গত শনিবার এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর বাবা। ঘটনার পর ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে যায়নি পুলিশ। ৩৬ ঘন্টা পর রোববার বিকেল পর্যন্ত নথিভূক্ত হয়নি মামলাটি। ছাত্রী, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ধর্মতীর্থ মূলবর্গ গ্রামের বাসিন্ধা জামাল ভূঁইয়ার ছেলে সোহাগ। তাদের বাড়ি থেকে ২ শতাধিক গজ দূরে ছাত্রীর বাড়ি। কালিকচ্ছ পাঠশালা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো ছাত্রী। প্রথমে সোহাগ বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ছাত্রীর পরিবার রাজি হয়নি। ক্ষিপ্ত হয় সোহাগ। বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে সোহাগ ওই ছাত্রীকে অশ্লীল কথাবার্তা বলতে থাকে। জোর পূর্বক বিবাহ করার হুমকি দিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টাও করতো। তার বাবা সহ সকল অভিভাবককে একাধিকবার বিষয় গুলো জানিয়েছেন ছাত্রীর বাবা। কোন প্রতিকার পায়নি তারা। বাধ্য হয়ে গত ২বছর আগে ছাত্রীর পড়ালেখা বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবার। এরপরও থামেনি সোহাগের উত্ত্যক্তের মাত্রা। গত শুক্রবার ছাত্রীটি সন্ধ্যার পর বসতঘর সংলগ্ন পুকুরঘাটে পানি আনতে যায়। পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সোহাগ ছাত্রীর মুখে চেপে ধরে টেনে খিচড়ে জোর পূর্বক পাশেই ফুল মিয়ার ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেয়। ধর্ষণের উদ্যেশ্যে ছাত্রীর শরীরের কাপড় ছিঁড়িয়া ফেলে। ছাত্রীর ধস্তাধস্তী ও আর্তচিৎকারে লোকজন দৌঁড়ে এসে জোরে ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। আত্মরক্ষার্থে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে পড়নের গেঞ্জীটি ছিঁড়ে থেকে যায় লোকজনের হাতে। ছাত্রীর বাবা তড়িৎ থানায় হাজির হয়ে মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানায় পুলিশকে। রোববার বিকেল পর্যন্ত এ মামলাটি নথিভূক্ত হয়নি। ঘটনার ২৪ ঘন্টা পর গত শনিবার রাত ১০টার পর ঘটনাস্থল তদন্ত করতে যান এস আই মো. খলিলুর রহমান। অভিযোগের বাদী ছাত্রীর বাবা আক্ষেপ করে বলেন, এত বড় কান্ড করেও সোহাগ এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে। ঘটনার ২৪ ঘন্টা পর পুলিশ এসেছে। আর মামলাটি এখনো এফআইআর হচ্ছে না। আমি গরীব মানুষ। তাই মেয়ের ইজ্জত হরণকারীর বিচার নিয়ে সংশয়ে আছি। এই দেশে গরীবদের জন্য আইন নেই। আল্লাহ ছাড়া আমার ও মেয়ের আর কোন উপায় নেই। কারন সেখানে বিচার পাইতে টাকা লাগে না। বিচার সেখানেই দিলাম। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, এক ঘরে বসে ছেলেটি মেয়েটিকে চোখ টিপ দিয়েছিল। অন্যকোন ঘটনা ঘটেনি। ছেলের গেঞ্জীটি ফেলে গেল কেন? এমন প্রশ্নের উত্তর জানা নেই তাদের। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই খলিলুর রহমানের মুঠোফোনে (০১৮১৮-৩৯১৭০৮) একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে হাতাহাতি হয়েছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন