বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে দুই ইউএনওকে চিঠি দিল স্কুলছাত্রী
বার্তা সম্পাদক প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ , ৬ আগস্ট ২০১৯, মঙ্গলবার , পোষ্ট করা হয়েছে 6 years আগে
আরিফুল ইসলাম সুমন ।।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর মেধাবি ছাত্রী মোমিনা আক্তার বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে জেলার সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার দুই ইউএনওকে চিঠি দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সরাইল নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ওই স্কুলছাত্রী নিজে উপস্থিত হয়ে এ চিঠি পৌঁছে দেয়। এরআগে সোমবার একই চিঠি আশুগঞ্জ নির্বাহী অফিসারের কাছে পৌঁছায় স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার। সে আশুগঞ্জ উপজেলার বইগর গ্রামের মৃত নুরুল আমীনের মেয়ে।
চিঠিতে স্কুলছাত্রী উল্লেখ করে, বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সে। তার “রোল নম্বর দুই”। চারবছর আগে তার পিতা গ্রামের দুস্কৃতিকারীদের হাতে খুন হন। সেই থেকে তার পরিবার চরম অসহায়ত্বের মাঝে দিনাতিপাত করে আসছে। বইগর গ্রামের শেখ সাদি ভূইঁয়ার বখাটে ছেলে উছমান ভূইঁয়া প্রায়ই এই স্কুলছাত্রীকে উত্যক্ত করে। এতে পরিবারের লোকদের কাছে বিচার চাওয়ায় ওই বখাটে স্কুলছাত্রীকে জোরপূর্বক বিয়ের ঘোষণা দেয়। কয়েকদিন আগে এই বখাটের পক্ষ নিয়ে গ্রামের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম, সজিব ভূইঁয়া, আকবর ভূইঁয়া, মলাই ভূইঁয়া ও শাহআলম ভূইঁয়া স্কুলছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে তার মাকে চাপ সৃষ্টি করে; উছমান ভূইঁয়া ও স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তারের বিয়ের কথা রফাদফা করেন।
এদিকে এই বিয়ের খবর পেয়ে স্কুলছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে জেলার সরাইল উপজেলার কাটানিশার গ্রামে বড় ভগ্নিপতি জাবেদ মিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। গত ৩ আগস্ট বখাটে উছমান ভূইঁয়া এখানে এসেও এই স্কুলছাত্রীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তার জানায়, “আমার বিয়ের বয়স হয়নি। আমি পড়ালেখা করতে চাই। আমার বড় তানজিনা আক্তার নামে এক বোন অবিবাহিত অবস্থায় আছেন। তিনি “তিন্নি আনোয়ারা মহিলা কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী। আমি এই বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেতে সকলের সহযোগিতা চাই।”
এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে বেড়তলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার দেব বলেন, নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া মোমিনা আক্তার মেধাবি ছাত্রী। মোমিনার দেওয়া একটি চিঠি পড়ে আমরা জানতে পেরেছি “তাকে বাল্যবিয়ের দেওয়ার প্রস্ততি চলছে। কিন্তু সে এ বিয়েতে রাজি নই। এ জন্যই সে আট দিন যাবত স্কুলে আসছে না। বিষয়টি আমরা দেখতেছি।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজিমুল হায়দার এই প্রতিবেদককে বলেন, স্কুলছাত্রী মোমিনা আক্তারের চিঠি আমি পেয়েছি। ওই ছেলে সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আমি ডেকে পাঠিয়েছি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এস এম মোসা বলেন, স্কুলছাত্রী মোমিনাকে এ বিষয়ে সকল ধরণের সহযোগিতা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে আশুগঞ্জ ইউএনও’র সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলবো।
আপনার মন্তব্য লিখুন